
চট্টগ্রামে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধু ইয়াসমিন আক্তার সুইটিকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
দগ্ধের পরপরই স্বামী তার স্ত্রীকে বাসায় আটকে রেখে রাতে ইয়াসমিনের শরীরের পোড়া চামড়াও টেনেটেনে ছিঁড়েছে বলে পরিবার দাবি করে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান,তার শরীরের ২৫ শতাংশ দগ্ধ রয়েছে।
তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়। তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
হাসপাতালে দগ্ধ ইয়াসমিনের ছোট ভাই রবিউল হোসেন মুন্না জানান,তাদের বাড়ি চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রগোনা লিচুবাগান এলাকায়।আর তার স্বামী মো. সলিমুল্লাহ রাফেলের বাসা চন্দ্রঘোনা পূর্ব কোদালা গোয়ালপুরা এলাকায়।
৫ বছরের ছেলে রাফিকে নিয়ে স্বামীর বাসাতেই থাকতো সে।৭ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।তার স্বামী রাফেল প্রথমে ইট বালুর ঠিকাদারি করতো।পরবর্তীতে তাকে ইয়াসমিনের বাবার বাড়ির মাধ্যমে ইন্টারনেট ক্যাবল ব্যবসায় দেওয়া হয়।
তিনি জানান,মাসে ২৫/৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতো রাফেল। তারপরও সে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতো। পরে আর ঋণ পরিশোধ করতো না।
ঋণ পরিশোধ করার জন্য ইয়াসমিনকে চাপ দিতো বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে। ইয়াসমিন বাবার বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করতো।ইতোমধ্যে এক-দেড় লাখ টাকাও এভাবে ইয়াসমিনের মাধ্যমে নিয়েছে সে।
বেশ কিছুদিন ধরে রাফেল নিয়মিত বাসায় বাজার সদাইও করতো না,রাত করে বাসায় ফিরতো,আর তার ফোনে বিভিন্ন মেয়েদের কল,মেসেজ আসতো।এইসব বিষয় নিয়ে ইয়াসমিনের সঙ্গে তার ঝামেলা হতো।
এ কারণে রাফেল তাকে মারধরও করতো।বাসা ফাঁকা থাকায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে রুমের দরজা আটকে মোটরসাইকেলের পেট্রোল ইয়াসমিনের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে।
পরে ইয়াসমিন নিজেই কাঁথা দিয়ে শরীর ঢেকে আগুন নিভিয়ে ফেলে। সারারাত দগ্ধ অবস্থায়ই রুমে আটকে রেখেছিলো তাকে।তার কাছে ফোন না থাকায় কাউকে কলও করতে পারেনি সে।আর কাউকে বাসায় ডেকে আনলে তাকেও জবাই করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় রাফেল।
এতো নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হয়নি রাফেল। রাতে দগ্ধ ইয়াসমিনের শরীরের পোড়া চামড়াও টেনেটেনে তুলেছে সে।
স্বজনরা আরও জানান,শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ইয়াসমিনের ফোন পেয়ে তারা স্বামীর বাসায় যায় তারা। সেখানে গিয়ে ওই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে নিয়ে তার বাসার দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।পরে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যারৈ নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়।সেখান থেকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখতে পারেন সময়ের সংবাদে । আজই পাঠিয়ে দিন Smersngbd.com@gmail.com মেইলে - Smersngbd.com@gmail.com